লাইকানস দ্য বিগিনিং
খালিদ বিন মাসুদ
এক.
পশ্চিম আকাশে সূর্য ঢলে পড়তেই দলের সরদার তার তাবুতে ঘণ্টা বাজানো শুরু করলো। ঘণ্টার শব্দ শুনতেই সবাই ছুটোছুটি করে সরদারের তাবুর সামনে এসে দাঁড়ালো। সবার চোখেমুখে আতংকের চিহ্ন। সবাই একে অন্যের সাথে কানাঘুষা করতে লাগলো। কানাঘুষা সোরগোলে পৌঁছাতেই তাবুর ভেতর থেকে কাঁপা কাঁপা কণ্ঠ ভেসে এল - "তোরা থামবি-ই।" এক মুহূর্তেই পিন পতন নিরাবতা নেমে এল। চারপাশে কেবল গাছের পাতার শব্দ ছাড়া আর কোনো শব্দই নেই। লাঠির ভরে খট খট আওয়াজ তুলে সরদার তাবুর বাইরে বের হয়ে বল্ল - "হিসসস! আর একটাও শব্দ না।" একটু থেমে –"তোরা কি ভুলে গেছিস শরৎ এসেসে, আর আজ শরতের প্রথম রাত। যা, গিয়ে উৎসবের আয়োজন কর।" ছোট্ট করে একবার শ্বাস নিয়ে –"আজ রাতে কেউ যেন না ঘুমায়।" আশপাশে তাকিয়ে –"এখন যা, দাঁড়িয়ে থাকলি কেন? উৎসবের প্রস্তুতি কর গিয়ে।" সবাই তাড়াহুড়া করে নিজের কাজ শুরু করে দিলো। সরদার তাবু থেকে বেরিয়ে একটি চেয়ারে বসে তার লাঠির উপর মুখটি ভর করে কাজের অগ্রগতি দেখতে লাগলো।ঘন জঙ্গলের মধ্যে একটি আগুনের আলোকে কেন্দ্র করে উৎসবে মেতে উঠেছে উপজাতিরা। ঢোলের তালে আগুনকে পরিক্রম করে উন্মাদের মতো নেচে চলেছে সবাই। ঢোলের আওয়াজ দূর থেকে ভেসে কানে এলো একজন ট্রাক ড্রাইভারের। শব্দ কানে যেতেই যেন ধড়ে প্রাণ ফিরে এলো ড্রাইভারের। সে ফিস ফিস করে ডাকল - "মতিন! ও মতিন। হেড লাইট টা জ্বালাবো নাকি বেটা?" মতিন-"আফনে ওস্তাদ। আফনে জেইডা ভালো বোঝেন সেইডাই করেন।" ড্রাইভার ভয়াল চোখে চারিদিকে চেয়ে কয়েকবার ঢোঁক গিল্ল। ট্রাক স্টার্ট দিয়ে হেড লাইট জ্বালাতেই চোখের সামনে দিয়ে ছায়ার মতো কয়েকটা কি যেন দ্রুত সরে গেল। ট্রাকের চারপাশ থেকে নেকড়ের ডাক কানে আসতে লাগলো। অবস্থা বেগতিক দেখে ড্রাইভার গাড়ি জোরে চালাতে শুরু করলো। মতিন চোখ বন্ধ করে ঈশ্বরকে ডেকে চলেছে। ড্রাইভার ঘামছে আর হাঁপাচ্ছে, তবুও গাড়ি চালাচ্ছে। হঠাৎ ড্রাইভার দেখল সামনের আকাশে রক্তিম আভা। ঘড়ির দিকে তাকিয়ে দেখে ভোর ৫টার কিছু বেশি সময় হয়েছে। ড্রাইভার-"ও মতিন। চোখ খোল। দেখ আমরা পারছি।" এমন সময় ট্রাকের চাকা গেতে গেল কাদায়। কড়া ব্রেক কষায় দুজনই বাড়ি খেলো গ্লাসের সাথে।
বহু কষ্টে চোখ খুলল ড্রাইভার। দেখে মতিন পাশেই অচেতন হয়ে পড়ে আছে। এমন সময় পায়ের থপ থপ আওয়াজ দূর থেকে ধিরে ধিরে ওদের দিকে এগিয়ে এলো।
দুই.
ঘড়িতে ভোর ৬টার অ্যালার্ম বাজতেই রুমন বিছানা থেকে উঠে জানালার পাশে তার পছন্দের দেওয়াল আয়নার সামনে দাঁড়ালো। রুমনের এই আয়নাটিকে ও নাম দিয়েছে “নতুন্দেখা”। প্রতি সূর্যোদয়, সূর্যাস্ত এমনকি পূর্ণিমাও এই আয়না দিয়ে দেখে রুমন। তাই সখ করে সে নাম দিয়েছে “নতুন্দেখা” অর্থাৎ নতুন করে দেখা। আয়নার সামনে অযথাই বেশ কিছুসময় দাঁড়িয়ে থেকে অলস ভঙ্গিতে পত্রিকাটি মেলে ধরলো। শিরোনামের উপর দিয়ে চোখ বোলানর সময় এক কর্নারের ছোট্ট একটি সংবাদে দৃষ্টি স্থির করলো রুমন। সুন্দরবন চান্দপাই রেঞ্জের শেষ এলাকায় স্থানীয় উপজাতিদের উদ্দেশ্যে রওনা হওয়া ট্রাক নিখোঁজ। রুমন হন্তদন্ত হয়ে ড্রয়ার থেকে বিভিন্ন ফাইল খুলে ঘাটাঘাটি শুরু করে দিলো। দিন গড়িয়ে রাত এলো। ঘরের সবখানে ছড়িয়ে ছিটিয়ে রয়েছে কাগজের পাতা। এর মধ্যে থেকে কয়েকটি কাগজ ছোঁ মেরে তুলে রুমন এবার ল্যাপটপ ও ইন্টারনেট নিয়ে বসলো। রাত গড়িয়ে ভোর হলো। রুমন ঘুমে বিভোর হয়ে আছে ল্যাপটপের পরেই। আজ কিন্তু রুমনের সখের আয়নার সামনে আর দাঁড়ানো হলো না।
পাঁচিলটা টপকিয়ে ঘন বনের মধ্য দিয়ে হামাগুড়ি দিয়ে জানালার পাশে এসে উঁকি দিলো রুমন। সাবধানে আশপাশ দেখে জানালা দিয়ে আবার উঁকি দিলো। কিন্তু এবার তার মাথায় কে যেন বন্দুকের নল ঠেকিয়ে দিয়েছে। তাই রুমন আস্তে আস্তে দুই হাত উঁচু করে দাঁড়ালো। দেখল জানালার ওপাশে বিকট গোঁফওয়ালা এক লোক বন্দুকের নল রুমনের দিকে তাক করে রেখেছে। রুমন ভয়ার্ত কণ্ঠে বলল-"আমি চোর না।" গোঁফওয়ালা-“দেখে তো তার থেকেও জঘন্য মনে হচ্ছে।” রুমন-“জি। মানে আমি, আগেও একবার আসতে চেষ্টা করেছি। কিন্তু কুকুরটা আমার এ দশা করেছে।” গোঁফওয়ালা-“হুমম তো কি চাই?” রুমন-“আ-আমি ফরেস্ট অফিসার অধিকারীর সাথে দেখা করতে চাই।” গোঁফওয়ালা-“আমিই অধিকারী।” রুমন-“ও হ্যালো স্যার, আমি রুমন। ফরেস্ট রিপোর্টার।” মি.অধিকারী গম্ভীর স্বরে-“আইডি কোথায়?” মুখ কাঁচুমাচু করে রুমন বলল-“জি। ওটাও কুকুরের কাছে।”
রুমনের কথা একনাগাড়ে অনেকক্ষণ শোনার পর ভাবলেশহীন ভাবে মি.অধিকারী বলল-“দেখো আমি রিটায়ার্ড হয়ে গেছি। এই মুহূর্তে আমি তোমাকে কোনো সাহায্য করতে পারবো না।” রুমন (ভরাট কণ্ঠে)-“স্যারর। আপনি রিটায়ার্ড করেছেন তো কি হয়েছে? আপনি ঐ এরিয়াটা ভালো চেনেন।” মি.অধিকারী-“হুমম” রুমন-“তাছাড়া একটু ভাবেন, আমরা এক বিস্ময় আবিষ্কার করতে চলেছি। এটা হয়তো আমার এক রিপোর্ট হবে কিন্তু আপনি ফেমাস হবেন। তাছাড়া লোকে যে বিষয়টি নিয়ে আপনাকে পাগল বলে তারও একটা নিষ্পত্তি হবে।” মি.অধিকারী হাত উচু করে-“ব্যাসস। আর না। গুণগান গাইতে যেয়ে লিমিট ক্রস করা যাবে না।” রুমন-“তাহলে কি ধরে নিবো আপনি যাচ্ছেন?” মি.অধিকারীর চোখ জ্বল জ্বল করে উঠলো। এক গভীর নিঃশ্বাস নিয়ে বলল-“চলো তবে যাওয়া যাক। তবে আমার এক শর্ত আছে।” রুমন-“আপনি যা চাইবেন তাই হবে।” মি.অধিকারী-“আমি মি. ফ্রুডো কেও নিতে চাই।” রুমন-“ কোনো সমস্যা নেই স্যারর। ওয়েলকাম টু দ্য মিশন।”
জীপের ড্রাইভিং সিটে বসে গাড়ি হাকাচ্ছে মি.অধিকারী। পাশের সিটে ল্যাগেজ। পেছনে অসহায়ের মতো বসে আসে রুমন। আর তার কোলে মি. ফ্রুডো। অর্থাৎ, মি.অধিকারীর পোষা কুকুরটি।
তিন.
সাথে এক্স ফরেস্ট অফিসার থাকায় জঙ্গলে ঢুকতে তেমন একটা বেগ পেতে হয়নি রুমনের। জীপের পেছনে বসে রুমন ছবি তুলছে আর জঙ্গলের দৃশ্য উপভোগ করছে। কিন্তু মি. অধিকারী সজাগ দৃষ্টি রেখে গাড়ি চালাচ্ছে। মেঠো পথ শেষে এবার এলো কাঁদা মাখা পথ। রুমনরা হাটতে শুরু করলো, সবার চোখের আড়ালে জঙ্গল গভীর থেকে গভীরতম হতে লাগলো। অনেকটা পথ পাড়ি দিয়ে ক্লান্ত সবাই, তাই বিশ্রামের জন্য একটি গাছের উপর উঠে বসলো। নাস্তা করতে করতে রুমন জিজ্ঞাস করলো-“স্যার। আশপাশে তো শুধু জঙ্গলই দেখি। পথ-তথ হারায় ফেলবো না তো।” মি.অধিকারী-“আমরা পথ হারিয়েই ফেলেছি।” রুমনের গলা দিয়ে যেন খাবার আর নামতেই চাইছে না। বহুত কষ্টে পানি দিয়ে খাবার গিলে চোখ ছানাবড়া করে চেয়ে রইল মি.অধিকারীর দিকে। মি.অধিকারী-“রুলস নাম্বার টুঃ জঙ্গলে ঘাবড়ানো যাবে না।” রুমন-“রুল নাম্বার ওয়ান টা কি?” মি.অধিকারী-“সময় হলেই বলব।” রুমনরা গাছ থেকে নেমে আবার হাটা শুরু করলো।
গভীর অরণ্যে এক উপজাতি মেয়েকে গাছের গুড়ির পেছনে বসে বেশ কিছু সময় ধরে লক্ষ্য করছে রুমনরা। মেয়েটি মনের আনন্দে পাতা কুড়িয়ে যাচ্ছে। রুমন কিছু বলতে যাবে, এমন সময় মি.অধিকারী তার হাত চেপে ধরে বলল-“আর একটু দেরি করো।” রুমন-“স্যার। আর দেরি করা যাবে না। অন্ধকার নেমে আসছে।” মি.অধিকারী-“রুলস নাম্বার ওয়ানঃ জঙ্গলে কাউকে বিশ্বাস করা যাবে না।” কুকুরের ঘেউ শব্দে দুজনই সামনে তাকিয়ে লাফিয়ে উঠলো। দেখে মেয়েটি তাদের সামনে দাঁড়িয়ে হাসছে। মেয়েটি-“আপনারা নিশ্চয়ই পথ হারিয়ে ফেলেছেন!” রুমন-“তুমি জানলে কিভাবে আমরা এই গাছের গুড়ির পেছনে লুকিয়ে আছি?” মেয়েটি মুচকি হেসে-“আমার নাম দিনান্তি। সামনেই আমাদের বস্তি। আমাকে সন্ধ্যার আগেই ফিরতে হবে। এখন চলুন আমার সাথে।” মি.অধিকারী-“চলো রুমন। যাওয়া যাক।” রুমন-“স্যার। আপনিই তো কেবল বললেন।” মি.অধিকারী, রুমনকে চুপ করিয়ে মেয়েটির পিছু নিয়ে হাটতে শুরু করলো। রুমন, মি.অধিকারীর এমন আচরণে হতবাক, তবু তাকে উদ্দেশ্য করেই হাটতে থাকলো।
অন্ধকার নামতেই রুমনরা জঙ্গলের বস্তিতে প্রবেশ করলো।
চার.
আগুনকে কেন্দ্র করে উপজাতীয় নৃত্য বেশ উপভোগ করছে রুমনরা। মি.অধিকারী মাছ খেতে খেতে সরদারের কাছে তাদের জনপদ সম্পর্কে জানতে চাইল। সরদার তাকে বিভিন্ন বিষয়ে জানালো। এসবের মধ্যে রুমনের একটি বিষয় নজর কাড়ল। সরদারের কথায়, প্রায় বছর খানেক আগে এখানে একদল সাদা পোশাক পরা লোক আসে। তারা এখানকার নেকড়েদের মেরে ফেলে এবং অনেককে ধরে নিয়ে যায়। তারপর আর কিছু জানা যায়নি। এরপর প্রায় ৬/৭ মাস পর ঐসব লোকেদের ফিরে পায় এরা। ব্যাস এতটুকু। ঢোলের তালে তালে রাত গভীর থেকে গভীরতর হতে থাকে।
মি. অধিকারীর ঝাঁকিতে মাঝ রাতে হঠাৎ ঘুম ভেঙে গেল রুমনের। রুমন তাকাতেই তার মুখ চেপে ধরল মি.অধিকারী। ফিস ফিস করে বলল-“বেটা অনেক বড় ভুল হয়ে গেছে। চলো পালাই।” রুমন-“মি. ফ্রুডো কোথায়?” মি.অধিকারী-“সে আর নেই।” আর দেরি না করে তারা দৌড় শুরু করলো। হাপাতে হাপাতে রুমন বলল-“বিষয়টা কি?” মি.অধিকারী-“এখানে কিছু বিজ্ঞানী আসে। ওরা এই উপজাতিদের সাথে নেকড়ের জেনেটিক ইঞ্জিনিয়ারিং করে।” রুমন-“মানে!?” মি.অধিকারী-“দুইটা আলাদা প্রাণী থেকে জীন ট্রান্সফার এর মাধ্যমে নতুন প্রজাতির প্রাণী তৈরি করাকে জেনেটিক ইঞ্জিনিয়ারিং বলে।” পায়ের থপ থপ আওয়াজ কাছাকাছি আসতেই তারা আবার প্রাণপণে ছুটতে শুরু করে। রুমন একটু থেমে-“এখন কি করব?” মি.অধিকারী অন্ধকারে হাত উঁচিয়ে বলে-“রুমন দেখো একটা ট্রাক।” রুমন-“হুমম” মি.অধিকারী-“আমার মাথায় একটা বুদ্ধি এসেছে।” বন্দুকটা লোড করে মি. অধিকারী দাঁড়িয়ে পড়লো। রুমনকে হাতের ইশারায় দৌড়াতে বলে পিছে ঘুরে দাঁড়ালো। ধিরে ধিরে মি. অধিকারী বন্দুকটি ট্রাকের তেলের ট্যাঙ্কের উপর ধরল। রুমন বিষয়টি আচ করতে পেরে জোরে ছুটতে শুরু করলো। কিন্তু নদীর কাদায় তার পা আটকে যাচ্ছে। কি করবে বুঝতে পারছে না। এমন সময় পেছন থেকে উপজাতি মেয়ে দিনান্তি কাকুতির স্বরে বলল-“আমাকেও নিয়ে যাও। ওরা আমাকে মেরে ফেলবে।” রুমন হাত বাড়ায়, দিনান্তিও হাত বাড়ায়। কিন্তু দিনান্তির হাতে ছিল নেকড়ের হিংস্রতা। হটাৎ বিস্ফড়নে চারিদিক আলোকিত হয়ে উঠলো। আগুনের আলোয় রুমন দেখতে পেলো দিনান্তির পৈশাচিক চেহারা। দিনান্তির হাতের নখ এসে বিধল রুমনের বুকে। রুমন নদিতে পড়ে গেল।
চোখের উপর তীব্র আলো পড়ায় রুমনের চোখ খুলল। দেখে সে হাসপাতালে। পাশে বসে আছে তার বন্ধু নীল। রুমন তার বন্ধুকে এই মিশন সম্পর্কে প্রতিনিয়ত ম্যাসেজে জানাতো। গত রাতে পালানোর সময় সে নীলকে ম্যাসেজে করেছিলো। রুমন তার বন্ধু নীলের দিকে তাকায়। নীল বলে-“মি. অধিকারীকে খুজে পাওয়া যায় নি। একটা ট্রাক বিস্ফড়ন হয়েছিলো। ওখানে অনেক নেকড়ে মরে থাকতে দেখা গেছে।” রুমনের চোখ আবার বুজে আসে।
১ মাস পর ...
রুমন তার ঘরে খাটের উপর বসে আছে। আজ সন্ধ্যা থেকেই তার গায়ে কেমন যন্ত্রণা করছে। রাত বাড়ার সাথে সাথে যন্ত্রণাও বাড়ছে। রুমন অস্থির হয়ে উঠেছে। সে দ্রুত ক্যলেন্ডার দেখে। আজ পূর্ণিমা। রুমন জলদি তার আয়নার সামনে যায়। কিন্তু রুমন আয়নায় নিজেকে দেখার পরিবর্তে আবিষ্কার করে, সে ধিরে ধিরে এক নেকড়ে মানবে পরিণত হবার দৃশ্য। রুমনের চিৎকারে আকাশ বাতাস ভারি হয়ে ওঠে। অবশেষে তার কণ্ঠস্বর বদলে নেকড়ের স্বরে পরিণত হয়। ..
এরকম আরো সায়েন্স ফিকশন গল্প পড়তে Science Fiction লিংকে ক্লিক করুন।
No comments:
Post a Comment